প্রতি বছরের মতো এবারও বৈশাখের শাড়ি পাঞ্জাবিতে এসেছে থিমভিত্তিক ছোঁয়া। নানা থিমের মধ্যে শতরঞ্জি, উজবেক সুজানি, মধুবনি ও মানডালা—এই চারটি থিমের ওপর নির্ভর করে শাড়ি তৈরি করেছে রঙ বাংলাদেশ। ছেলে-মেয়ে থেকে শুরু করে বাসার সবাই যাতে বৈশাখী থিমের পোশাক পরতে পারেন সেদিক চিন্তা করেই পোশাকে আনা হয়েছে বৈচিত্র্য।
বৈশাখে পাঞ্জাবির ওপরই ঝোঁক থাকে বেশির ভাগ ছেলের। বুনন নকশার পাঞ্জাবির কালেকশনে মনোযোগী ছিল ইজির ডিজাইনাররা। আবার ছেলেদের পাঞ্জাবিতে নকশার কারুকার্যের বদলে আরামদায়ক কাপড়ে বেশ মনোযোগ দিয়েছে ইজি ব্র্যান্ড। বৈশাখে আবহাওয়া বরাবরই থাকে গরম, তাই ছেলেদের পাঞ্জাবির কাপড়ও নির্ধারিত হয়েছে পাতলা ধাঁচের। এজন্য নানা নতুনত্ব আনা হলেও বৈশাখের পাঞ্জাবিতে গরমের কারণে অতিরিক্ত নকশার কাজ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। নকশার ভারে যেন পোশাকটি পরতে বিরক্ত না লাগে, সেই দিক বিবেচনা করেই এক রঙের পাঞ্জাবিই পেয়েছে প্রাধান্য।
গরমের কথা চিন্তা করে বৈশাখের পোশাক করা হয়েছে সুতি কাপড়কে কেন্দ্র করে। পাতলা কাপড়ের মধ্যে আরামদায়ক পোশাক পরাই ভালো। এতে অস্বস্তিও লাগে কম। সুতি ছাড়াও রঙ বাংলাদেশে রয়েছে মসলিন ও লিনেন কাপড়ের শাড়ি। ছেলেদের পাঞ্জাবিগুলো সুতি, সিল্ক ও টিস্যু ফ্যাব্রিকে তৈরি করা হয়েছে। প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে আরাম, সঙ্গে ফ্যাশনেও।
পহেলা বৈশাখের পোশাক মানেই সাদা-লাল—এই ধারণার অনেকটাই পরিবর্তন এসেছে এখন। তবে নীল, কমলা, ম্যাজেন্টার মতো গাঢ় রং মূল রঙের সঙ্গে মেশানো হয়েছে। এতে নকশায় থাকছে বৈশাখের আমেজ। এ ছাড়া হালকা রঙের পাঞ্জাবি থেকে গাঢ় রঙের পাঞ্জাবি—দেখা যাবে সবই।
সাদা-লাল ছাড়া কমলা, ম্যাজেন্টা রঙের পাঞ্জাবির চল দেখা যাচ্ছে এখন। প্রায় প্রতিটি ব্র্যান্ড সাদা-লাল ছাড়াও বৈশাখে মেরুন, সবুজ, টিয়া, বাদামি রঙের পাঞ্জাবির কালেকশন বাড়িয়েছে।
মধুবনি, পুরাকীর্তি, ট্রাইভাল, ট্র্যাডিশনাল ফোক, জামদানি, কলকা, ফ্লোরাল ও জ্যামিতিক নানা মোটিফের বৈশাখী পোশাক এনেছে কে ক্রাফট। সময়, আবহাওয়া ও পরিবেশের কথা মাথায় রেখে সুতি, তাঁত ও লিনেনের মতো আরামদায়ক কাপড় বেছে নেওয়া হয়েছে। পোশাকের অলংকরণে বেছে নেওয়া হয়েছে হাতের কাজ, এমব্রয়ডারি, স্ক্রিন ও ব্লক প্রিন্ট। থাকছে শিশুদের জন্য আলাদা ডিজাইনের বৈশাখী পোশাক।
বৈশাখে শাড়ি-পাঞ্জাবিই পরতে হবে, তা কিন্তু নয়! আরামের জন্য শার্ট, টি-শার্ট, কামিজ, কুর্তি, স্কার্ট—পরতে পারেন যেকোনো পোশাক।
এর মধ্যে শিশুদের বৈশাখের পোশাকে রয়েছে প্রতিবারের মতোই বৈচিত্র্যময় কাজ, সাজ ও নতুন ডিজাইনের ছোঁয়া। ফ্যাশন হাউসগুলো ঘুরে দেখা গেল নতুন ডিজাইনের শিশুদের পাঞ্জাবি, শাড়ি, শার্ট, টি-শার্ট, ফতুয়া, স্কার্ট, সালোয়ার-কামিজ, টপ যেমন আনা হয়েছে; তেমনি গত বছর যেগুলো স্টোর থেকে বের হয়নি সেগুলোও থাকছে পাশাপাশি লাইনে। ডিজাইনারদের দুই বছরের কাজ একসঙ্গে প্রদর্শিত হওয়ায় থাকছে মনের মতো ডিজাইন ও পছন্দের বৈশাখী পোশাক বেছে নেওয়ার অবারিত সুযোগ।