বাঙালি নারীর কাছে শাড়ির চাহিদা অন্যরকম। আর উৎসব হলেতো কথাই নেই। ঈদ বলে কথা, শাড়িপ্রেয়সীদের কী আর শাড়ি ছাড়া ঈদ চলে। ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী ফ্যাশন হাউসগুলো করোনাকালেও নিয়ে এসেছে নতুন পোশাকের সম্ভার। সালোয়ার-কামিজ বা কুর্তি ছাড়াও নারীদের পছন্দের জায়গা দখল করে আছে শাড়ি।
এবার বাহারি তাঁতের শাড়ির পাশাপাশি এসেছে মসলিন, এন্ডি কটন এবং এন্ডি সিল্ক। কিছুটা ঠান্ডা রং প্রাধান্য পেয়েছে এবারের শাড়িগুলোতে। কাপড়ে নীল, সবুজ, মেরুন, লাল, ফিরোজা এবং সাদার ব্যবহার ছিল চোখে পড়ার মতো। আর কাজের ক্ষেত্রে নকশি, অ্যাপ্লিক, দড়ি, লেইস, বিডস, এমব্রয়ডারি, ওয়াশ, হ্যান্ডপেইন্ট, ব্লক, স্ক্রিনপ্রিন্ট অর্থাৎ মিশ্র মাধ্যম প্রাধান্য পেয়েছে।
শাড়ির মধ্যে সুতির কদর সব সময়ই অনেক বেশি। যে কোনো অনুষ্ঠানের জন্যই এগুলো মানানসই হয়ে ওঠে। যেমন পরতে পারেন ঘরে, তেমনি জমকালো উৎসবেও। দেশি ফ্যাশন হাউসগুলো সুতি শাড়ির বেশ নজরকাড়া কালেকশন নিয়ে এসেছে। করোনাকালেও বিশেষ নকশা এবং প্রিন্ট উঠে এসেছে শাড়িতে। যার মাধ্যমে হয়ে উঠেছে এক্সক্লুসিভ। বরাবরের মতো এবারও ব্লক প্রিন্টের আধিপত্য রয়ে গেছে। তার সঙ্গে বাড়তি মাত্রা যুক্ত করেছে সুতার কাজ এবং এমব্রয়ডারি। কোনো কোনো শাড়িতে রয়েছে হালকা পাথরের কাজ। একরঙা সুতি শাড়িতে তিন-চাররঙা পাড়ের চলও বেশ রয়েছে। এসব শাড়িতে নীলের আধিক্য বেশি হলেও মিলবে পোলাপি, সবুজ এসব ঠান্ডা রং।
সব বয়সে বেশ মানানসই হয়ে ওঠে জামদানি। যে কোনো রঙেই যেন আপনাকে সাজিয়ে তুলবে নতুন রূপে। তাই যে কোনো দিন বা উৎসবে আপনাকে আলাদা করে তুলবে এই শাড়ি। প্রতিবারের মতো এবারও ঈদে জামদানির বাজার বেশ জমজমাট। টাঙ্গাইল শাড়িতে এবার বাজারে দেখা যাচ্ছে একরঙা চওড়া পাড়। তাতে পিটা করে সোনালি সুতার কাজ। টাঙ্গাইল শাড়ির পাড় তো মন কাড়া আছেই, সঙ্গে ভরাট কাজের আঁচলও কিন্তু কম যায় না সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে। গাঢ় রঙের টাঙ্গাইল শাড়িই বেশি টানছে ক্রেতাদের।
কোথায় পাবেন, কেমন দাম
শাড়ি কিনতে যেতে পারেন চাঁদনী চক, মিরপুর বেনারসি পল্লি, নিউমার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক এবং দেশের মার্কেটগুলোতে। এছাড়াও করোনাকালে ঘরে বসেই অনলাইনে কিনতে পারবেন ঈদের শাড়ি। দেশি ফ্যাশন হাউসের পাশাপাশি ফেসবুককেন্দ্রিক শপগুলোও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। এগুলোর মধ্যে অন্যতম পটের বিবি, শাড়ি ঘর, হস্ত মেলা এবং কমলিকা। এ ছাড়াও মিলবে বিশ্বরঙ, কে-ক্র্যাফট, অঞ্জন'স, বিবিয়ানা, সৃষ্টি, দেশীদশ, মনেরেখ শাড়িজ, গুলশান শাড়িজ এবং টাঙ্গাইল শাড়ি কুটিরসহ বিভিন্ন শোরুমে। কাতান শাড়ি পাবেন তিন হাজার ৫০০ টাকা থেকে। সিল্কের শাড়িগুলো পাওয়া যাবে তিন হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। কটন সিল্ক ও হাফ সিল্ক মিলবে তিন হাজার থেকে আট হাজার টাকায়। পিওর সিল্কগুলো আট হাজার টাকা থেকে শুরু। এক হাজার ৫০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকার মধ্যেই পাবেন টাঙ্গাইল শাড়ি।