চারদিকে প্রখর রোদ। মাঝে মধ্যে বৃষ্টির দেখা মিললেও গরম যেন এক মুহূর্তের জন্যও কমছে না। এ সময়ে আরাম পোশাক হিসেবে বেছে নিতে পারেন সাদা। কারণ সাদাতেই হতে পারে স্বস্তি। ফ্যাশন হাউসগুলো এই সময়ের পোশাক হিসেবে সাদা এবং পাতলা কাপড়কে বেশি প্রাধান্য দিয়েছে। আর পোশাকের জমিনে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে হালকা রং; যা আপনার চোখেরও শান্তি দেবে এবং পরেও বেশ আরাম পাবেন।
নীল, গোলাপি, মেরুন, হলুদ বা সবুজ যে রংই ব হোক না কেন, সবই হালকা। সাদা কাপড়গুলোতে এ রংগুলো মানানসই। হালকা রং এখন আবহাওয়ার জন্য বেশ আরামদায়ক। সেই দিক থেকে সবচেয়ে এগিয়ে সাদা। ট্রেন্ড পরিবর্তনকারী প্রধান চার ঋতুতে সাদা যেন গরমের বন্ধু। ফ্যাশনে এখন তাই সাদা ইন। সাদার মধ্যেই ডিজাইনাররা আনছেন রঙের খেলা, কাপড়ের ভিন্নতা। সে ক্ষেত্রে মানানসই থাকতে হয় সম্পূর্ণ ড্রেসআপের। ফ্যাশনে নতুন মাত্রা যুক্ত করতে সাদাতে আনা হয়েছে ভিন্নতা। আর সাদার সঙ্গেই ম্যাচিংয়ের সুযোগ থাকে বেশ। শুদ্ধ, পরিচ্ছন্ন ও সরলতার একমাত্র প্রতীক সাদা। সঠিক কাপড় ও নকশা নির্বাচন করতে পারলে সাদা হতে পারে আপনার এই সময়ের অন্যতম সঙ্গী। অফিস থেকে শুরু করে বন্ধুর আড্ডা বা বিয়েবাড়ি সবখানেই পরতে পারেন এই রংটি। সাদামাটা বা জমকালো যাই হোক না কেন, সাদা পোশাকে ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। আর গরম হলে তো কথাই নেই। এই সময় সাদার কদর বেড়ে যায় আরও বেশি।
দেশীয় ফ্যাশনে প্রত্যেক গরমেই আসে নতুন ডিজাইন। তা হতে হয় হালকা কাজের মধ্যেই। গ্রীষ্ফ্ম মানেই কম কাজের ডিজাইন, পাতলা কাপড়। সেই শর্ত মেনে ডিজাইন সাধারণ ক্রেতার পছন্দে এলেই না তার সার্থকতা আসে। ডিজাইনে সাদার সঙ্গে ঠিকঠাক থাকতে হয় সে রংটিও। কামিজ, শাড়ি, ফতুয়া, টপসে ডিজাইন হতে পারে প্রিন্টিং অথবা এমব্রয়ডারির। কিংবা কাট-ওয়ার্ক, হ্যান্ড পেইন্টের কাজ। প্রিন্ট থাকতে পারে ব্লক অথবা স্ট্ক্রিনের। যে কোনো প্রিন্টের কাজই এখন সামনের সাইডে কম কাজের মধ্যে মানাবে। ছোট আকারের কোনো মোটিফ সম্পূর্ণ পোশাকেই মানানসই হবে যদি তা স্ট্ক্রিন প্রিন্ট হয়। রং আসতে পারে সাদার মধ্যে সাদা অথবা কালো। অথবা গোলাপি, আকাশি, কমলার মতো হালকা রং। এমব্রয়ডারির কাজ খুব বেশি এই গ্রীষ্ফ্মে দেখা না গেলেও তা ডিজাইনে থাকতে পারে। এ ক্ষেত্রে বেছে নিতে হবে খুব কম কাজ এবং হালকা রং দেখে। সাদার সঙ্গে ম্যাচিং করে পোশাকে আসতে পারে কাট-ওয়ার্ক ডিজাইন। সামনের সাইডের পাশাপাশি ফতুয়া, টপসে ভিন্নতা আনতে পারে পেছন সাইডের কাট-ওয়ার্ক। তবে সে কাজের ফিনিশিং হওয়া চাই নিখুঁত। এ ক্ষেত্রেও রং সাদার সঙ্গে কালো অথবা হালকাকেই প্রাধান্য দিন। আর এই জাতীয় যে কোনো ড্রেসই একটু ঢিলেঢালা দেখে ট্রেন্ডি প্যাটার্নের মধ্যে নেওয়া ভালো এবং বিপরীতে সালোয়ার হতে পারে ডিভাইডার, পালাজ্জো, তার্কিস, বেলুন, ধুতির মতো প্যাটার্নের। শাড়িতে হ্যান্ড পেইন্ট ডিজাইনে ভিন্ন মাত্রা এনে দেয়। নিরেট সাদা অথবা অফহোয়াইটের মধ্যে হ্যান্ড পেইন্টের কাজ শৈল্পিক ধাঁচ আনতে সক্ষম। এ ধরনের শাড়ি বৈশাখেরও গল্প বহন করে। বিভিন্ন উৎসব বা পার্টিতে পরে যাওয়া যাবে এর একটি।
এই গরমে সবচেয়ে চল বেশি কটন বা সুতি কাপড়ের। কটনেও রয়েছে রকমফের। তাদের মধ্যে ভয়েল কাপড় বেশি জনপ্রিয়। এটি আরামদায়কও বটে। ভয়েল কাপড়ে ফতুয়া এবং টপসের জুড়ি নেই। কটনের বাইরে লিনেন কামিজ, ফতুয়া, টপসের জন্য ভালো। কামিজ অথবা শাড়িতে বেশি দেখা যায় হাফ কটন, হাফ সিল্ক্ক এবং এন্ডি কটন-সিল্ক্কের মতো কাপড়।
দেশীয় ফ্যাশন হাউসের মধ্যে দেশীদশ, সদেশী, লারিভ, সারা, কিউরিয়াস, আড়ং এবং ইয়োলোতে মিলবে সাদা জমিনে হালকা রঙের ডিজাইনের মনের মতো পোশাক। সাদা পোশাকে মেয়েদের সবচেয়ে বেশি চাহিদা রয়েছে কুর্তি, তাগা, ফ্রক, টুপিস ও থ্রিপিস। ব্র্যান্ডশপ ছাড়াও নিউমার্কেট, গাউসিয়া, বসুন্ধরা শপিংমল, যমুনা ফিউচার পার্কসহ বিভিন্ন মার্কেটে মিলবে সাদা পোশাক।