সব

বগা লেকের রহস্য

আপডেট : ১৫ জুলাই ২০২১, ০৩:৩৭

একে দ্য লেক অব মিস্ট্রি বা ড্রাগন লেকও বলা হয়ে থাকে। তবে, বগা লেকের আসল নাম বগাকাইন হ্রদ, যা স্থানীয়ভাবে বগা লেক নামে পরিচিত।

দেশের সবচেয়ে উঁচু মিঠা পানির লেক এটি। বান্দরবান শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে রুমা উপজেলায় বগাকাইন হ্রদের অবস্থান। কেওকারাডং পর্বতের গা ঘেঁষে এই লেকের অবস্থান। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২,৪০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত লেকটি।
বগা লেক নিয়ে মিথ

বাংলাদেশের ভূতাত্ত্বিকগণের মতে, আজ থেকে প্রায় ২ হাজার বছর আগে উৎপত্তি হয় বগা লেকের। এর উৎপত্তি নিয়েও প্রচলিত আছে নানা গল্পকাহিনী। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত গল্পটি হলো, এক সময় বান্দরবানে একটি চোঙাকৃতির পাহাড় ছিল।

ওই পাহাড়ের কোলে বাস করত ম্রো, বম, তঞ্চঙ্গ্যা, ত্রিপুরা সহ আরও বেশ কিছু আদিবাসী সম্প্রদায়। হঠাৎই আদিবাসী গ্রামের গবাদিপশু এমনকি শিশুরাও উধাও হতে থাকে। দুশ্চিন্তায় পড়েন আদিবাসীরা।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায়, পশুসহ শিশুদের সর্বশেষ পায়ের ছাপ দেখা যাচ্ছে ওই চোঙা আকৃতির পাহাড়ে। এরপর আদিবাসীরা পাহাড়ের মাথায় উঠে দেখে, সেখানে বসে আছে বিশাল এক ড্রাগন।

অপর এক পৌরাণিক কাহিনীতে বলা হয়েছে বগা লেক ছিল একটি সমৃদ্ধ ম্রো গ্রাম। গ্রামের পাশে একটি সুড়ঙ্গে বড় আকারের সাপ থাকত। এক দিন ওই সাপ গ্রামবাসী ধরে খেয়ে ফেলে।

ওই সাপ খাওয়ায় নাগরাজার প্রতিশোধের কারণে গ্রামবাসীসহ গ্রামটি দেবে গিয়ে বগা লেকের সৃষ্টি হয়। এখনো অনেক বম, ম্রোর বিশ্বাস, হ্রদের গভীরে থাকা নাগরাজ লেজ নাড়ালে হ্রদের পানি ঘোলাটে হয়ে ওঠে।

বগাকাইন হ্রদ মৃত আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ কিংবা মহাশূন্য থেকে উল্কাপিণ্ডের পতনের ফলে সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে আবার ভূমিধ্বসের কারণেও এটি সৃষ্টি হতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন। এটি ভুবন স্তরসমষ্টির নরম শিলা দ্বারা গঠিত।

২০০৯ এর তথ্যসূত্রে জানা যায় বগা হ্রদের পানি অত্যন্ত সুপেয়, এবং হ্রদের জলে প্রচুর শ্যাওলা, শালুক, শাপলা ও অন্যান্য জলজ উদ্ভিদ এবং প্রচুর মাছ এমনকি বিশালাকার মাছ আছে।

এই লেকের তিন দিকই পাহাড়বেষ্টিত। এই শৃঙ্গগুলো আবার সর্বোচ্চ ৪৬ মিটার উঁচু বাঁশঝাড়ে আবৃত। এর গভীরতা হচ্ছে ৩৮ মিটার (১২৫ ফুট)। এটি সম্পূর্ণ আবদ্ধ একটি লেক। এখান থেকে পানি বের হতে পারে না, আবার কোনো পানি ঢুকতেও পারে না। এর আশেপাশে পানির কোনো দৃশ্যমান উৎসও নেই।

তবে হ্রদ যে উচ্চতায় অবস্থিত তা থেকে ১৫৩ মিটার নিচে একটি ছোট ঝর্ণার উৎস আছে। যা বগা ছড়া নামে পরিচিত। হ্রদের পানি কখনও পরিষ্কার আবার কখনোবা ঘোলাটে হয়ে যায়। কারণ হিসেবে অনেকে মনে করেন এর তলদেশে, একটি উষ্ণ প্রস্রবণও আছে।
এই প্রস্রবণ থেকে পানি বের হওয়ার সময় হ্রদের পানির রং বদলে যায়। অলৌকিক সৌন্দর্যে ঘেরা বগা লেক যেন অজস্র রহস্যের কেন্দ্রবিন্দু। স্থানীয় অধিবাসীদের ধারণা এই হ্রদের আশেপাশে দেবতারা বাস করেন। এজন্য তারা অনেকেই পূজা দেন।

রহস্যময় উপকথা এবং অকল্পনীয় প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য বগাকাইন হ্রদকে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ দর্শনীয় স্থানে পরিণত করেছে। ট্রেকিং এবং ক্যাম্পিংয়ের জন্য পরিচিত এক স্থান হলো বগা লেক।

হিমাচলের আকর্ষণীয় ১০ পর্যটন কেন্দ্র

মেঘের মেলা নাকি ভেলা !

পর্যটকদের নিরাপত্তায় কক্সবাজারে সিসিটিভি ক্যামেরা

সাজেকে ফিরছে পর্যটকরা

গুহাতে ৫০০ দিন

সৌন্দর্যের জাদু যাদুকাটা নদীতে

আরও BUZZ

আজকের খেলা

আজকের খেলা

কানাডা কোচের মেসিকে হুমকি

ঝগড়ার পর ভুলেও যেসব কাজ করবেন না ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে

ডিএসএলআরের মতো স্মার্টফোনেই ছবি তুলতে সহায়ক ৫ অ্যাপ