বৈশ্বিক উষ্ণতায় প্রকৃতিতে ঘটছে আমূল পরিবর্তন। এমনকি পুরোপুরি হারিয়ে যাওয়ার দ্বারপ্রান্তে এসে দাড়িয়েছে বিখ্যাত গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ। আসুন দেখে নেই বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে কোন কোন বিখ্যাত পর্যটনকেন্দ্র বদলে যাচ্ছে বা বিলীন হওয়ার দ্বারপ্রান্তে।
দ্য গ্রেট ব্যারিয়ার রিফ: অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পূর্ব সমুদ্র তীরে প্রায় চৌদ্দশ মাইল এলাকাজুড়ে বিস্তৃত বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই কোরাল রিফ। প্রতিবছর কয়েক মিলিয়ন ডুবসাঁতারু আর স্কুবা ডাইভার ভ্রমণ করে বিখ্যাত এই পর্যটনকেন্দ্র।
কিন্তু বৈশ্বিক উষ্ণতার ফলে সমুদ্রের পানির তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে মরে যাচ্ছে এখানকার কোরাল। তারা দিনে দিনে সাদা হয়ে যাচ্ছে। এভাবে বদলে যাচ্ছে ওই এলাকার ভূ-প্রকৃতির স্বাভাবিক গঠন।
ভেনিস: খালের শহর ভেনিস। বিশ্বের অন্যতম রোমান্টিক এই শহরজুড়ে একেবেকে জড়িয়ে থাকা খালে বয়ে চলে অ্যাড্রিয়াটিক সাগরের জল। এইসব খালে গন্ডোলায় ভেসে বেড়ানো অন্যতম চমৎকার অভিজ্ঞতা।
কিন্তু সম্প্রতি এই শহরের পিয়াজ্জা, স্যান মার্কোসহ অন্যান্য নিম্নাঞ্চলে দেখা যাচ্ছে বন্যা। আর সাগরের জল বেড়ে যাওয়ায় ভেনিসের উপরও পড়ছে বিরূপ আর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব। বন্যানিয়ন্ত্রণ বাধসহ নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে স্বর্গীয় ভেনিসকে রক্ষার জন্য।
গ্লেসিয়ার ন্যাশনাল পার্ক: আমেরিকা ও কানাডার সীমান্ত এলাকার কয়েক মিলিয়ন এলাকাজুড়ে ছড়িয়ে আছে এই গ্লেসিয়ার ন্যাশনাল পার্ক। নানারকম জীববৈচিত্র্যে ভরপুর এই পার্কে প্রতিবছর লাখ লাখ মানুষ ঘুরতে যায়। শুধুমাত্র ২০১৯ সালেই এই পার্কে তিরিশ লাখ পর্যটন ভ্রমণ করে।
কিন্তু বৈশ্বিক তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার প্রভাবে বিরূপ প্রভাব পড়ছে এখানকার বিপুল প্রাণজগতে। কয়েক হাজার রকমের গাছ ও কয়েকশ প্রজাতির প্রাণির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। তবে সবচেয়ে ক্ষতির মুখে এই পার্কের বিশাল বিশাল গ্লেসিয়ার বা হিমবাহগুলো। তাপমাত্রা বাড়ার ফলে গলতে শুরু করেছে এইসব হিমবাহ।
দ্য ডেড সি: লবণের কারণে এর ঘনত্ব এতটাই বেশি যে মানুষ ইচ্ছামত ভেসে থাকতে পারে। পর্যটকদের কাছে এটিই এর সবচেয়ে বড় আকর্ষণ।কিন্তু এই সহস্রাব্দের শুরুর দিকে উন্নয়ন কাজ শুরু হওয়ার ফলে বছরে তিন ফিট করে কমে যাচ্ছে এর আকার। বাঁধ গড়া, জলাধার তৈরি এবং পাইপলাইন বসানোর জন্য কয়েক বছরে এর পানির লেভেল অন্তত পাঁচ শতাংশ নেমে গেছে। এছাড়াও ধারণা করা হয়, মৃতসাগরের জলে নিরাময় গুণ আছে। ফলে প্রসাধন প্রতিষ্ঠানগুলোও এখান থেকে জল আরোহন করে। এভাবে শুকিয়ে যেতে থাকলে ২০৫০ নাগাদ ডেল্টা সি পুরোপুরি শুকিয়ে যাবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।