সপ্তাহ দুয়েক আগে শাওমি তাদের রেডমি নোট ১০ সিরিজের দাম বাড়িয়েছে। কয়েকদিন আগে চারটি স্মার্টফোনের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে রিয়েলমি। একই পথ অনুসরণ করেছে মাইক্রোম্যাক্স। এসব প্রতিষ্ঠানের স্মার্টফোনের দাম বাড়ার সেরকম কোনো প্রভাব বিস্তার না করলেও ভবিষ্যতে ফোনের দাম বৃদ্ধির বিষয়টিকে ইঙ্গিত করছে। হঠাৎ করেই কেন স্মার্টফোনের দাম বাড়ছে?
ক্যানালিসের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে ধীরে ধীরে স্মার্টফোনের সরবরাহ বাড়ছে এবং 2022 সালে আরো বাড়ার আশা করছেন প্রযুক্তিবিদরা। তবে এ সরবরাহ বাড়ার মধ্যে বিভিন্ন যন্ত্রাংশের সংকটও তৈরি হচ্ছে। বিশেষ করে প্রধান উপাদান চিপসেট ও মেমোরির দাম বেড়ে যাওয়ায় উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এ ব্যয় বহন করবে নাকি ভোক্তাদের ওপর বর্তাবে, সেটি নিয়ে সংশয়ের সৃষ্টি হয়েছে।
জুলাই থেকেই এ দাম বাড়তে থাকে এবং এখন পর্যন্ত তা ভোক্তাদের ওপরই চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। মূলত এন্ট্রি লেভেল ও সাশ্রয়ী মূল্যের হ্যান্ডসেট খাতেই দাম বেড়েছে।
ক্যানালিসের মতে, এলটিই চিপসেটের উৎপাদন ও সরবরাহে ব্যাপক সীমাবদ্ধতা রয়েছে। যে কারণে এন্ট্রি লেভেল ও সাশ্রয়ী মূল্যের বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়েছে।
অন্য আরেকটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান গার্টনারের ধারণা, চাহিদা ও সরবরাহের ভারসাম্য থাকায় বিশ্বব্যাপী চলমান চিপ সংকট এখনো সেভাবে স্মার্টফোন শিল্পকে প্রভাবিত করতে পারেনি। প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আসন্ন প্রান্তিকে এ অবস্থা পরিবর্তিত হতে এবং এর ফলে বিশ্বব্যাপী স্মার্টফোনের গড় বিক্রয়মূল্য বাড়তে পারে।
চলতি বছরের শুরুর দিকে রিয়েলমির ভাইস প্রেসিডেন্ট জু চি স্মার্টফোনের দাম বাড়ার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। ফোরজি প্রসেসরের ঘাটতি ছাড়াও চার্টিং অ্যাডাপ্টর, মেমোরি চিপসেট এবং অন্যান্য উপাদানের দামও বেড়েছে। এ দাম বাড়ার ফলে স্মার্টফোন উৎপাদন ব্যয় ১০ শতাংশ বেড়েছে, যা শেষ পর্যন্ত ভোক্তার কাছেই পৌঁছাবে।
অন্যদিকে গত মার্চে শাওমির প্রেসিডেন্ট সাং উইয়াংও একই বিষয়ে সতর্ক করে দিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, প্রতিষ্ঠান যথাসম্ভব দাম কমানোর চেষ্টা করবে। তবে একটি নির্দিষ্ট সীমা অতিক্রম করার পর ভোক্তাদের কাছেই পৌঁছাবে। এক্ষেত্রে মার্জিন কম হওয়ায় সাশ্রয়ী ও কম দামের হ্যান্ডসেট সেগমেন্ট বেশি প্রভাবিত হবে।
স্মার্টফোনের দাম বাড়ার আরেকটি কারণ হিসেবে ফাইভজি নেটওয়ার্কের বিস্তৃতিকেও তালিকায় রাখছেন প্রযুক্তিবিদরা। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ ধীরে ধীরে ফাইভজি প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। সেই সঙ্গে ফাইভজি ফোনের খ্যাতিও বাড়ছে। যে কারণে স্মার্টফোনের দাম আরো বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে। ব্যবহারকারীরাও ফাইভজি ডিভাইসে স্থানান্তরিত হচ্ছেন। যার ফলে ডিভাইসের চাহিদাও বাড়ছে।