যদি জমি থেকে সবজি তোলার জন্য বছরে অর্ধ কোটিরও বেশি টাকা বেতন দেওয়া হয়, তাহলে চাকরিটা লুফিয়ে নেবেন না এমন মানুষ হয়তো খুব কমই পাওয়া যাবে! শুধুমাত্র ক্ষেত থেকে বাঁধাকপি তোলার জন্যই বছরে ওই বেতন দেওয়া হবে অনেকে তা বিশ্বাসও করবেন না। কিন্তু অবিশ্বাস্য হলেও সত্য, কর্মীর হাহাকারের কারণে এমন চাকরির বিজ্ঞাপন দিয়েছে ব্রিটিশ একটি কোম্পানি।
ব্রিটেনের কৃষিবিষয়ক ওই কোম্পানি বছরজুড়ে ক্ষেত থেকে বাঁধাকপি এবং ব্রকলি তোলার জন্য কর্মীদের মোটা বেতনের প্রস্তাব দিচ্ছে। শুধু তাই নয়, এর পাশাপাশি আরও বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা আছে, যেগুলো যে কাউকে এই কাজের প্রতি আকৃষ্ট করবে।
যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম দ্য মেট্রো বলছে, টি এইচ ক্লিমেন্টস অ্যান্ড সন লিমিটেড নামের ওই সংস্থার চাকরির বিজ্ঞাপন অনলাইনে দেওয়া হয়েছে। যেখানে বলা হয়েছে, সারা বছর মাঠ থেকে বাঁধাকপি এবং ব্রকলি তোলার কাজের জন্য জনবল নিয়োগ করা হবে। কর্মীকে প্রতি ঘণ্টায় ৩০ ইউরো করে দেওয়া হবে। অর্থাৎ বাংলাদেশি টাকায় ঘণ্টায় মজুরি প্রায় ৩ হাজার দুই টাকা।
ব্রিটেনের লিঙ্কনশায়ারের টি এইচ ক্লিমেন্টস অ্যান্ড সন লিমিটেডের প্রকাশিত বিজ্ঞাপন
একজন কর্মী দিনের আট ঘণ্টায় ২৪০ ইউরো অথবা এক সপ্তাহের ৪০ কর্মঘণ্টায় এক হাজার ২০০ ইউরো পাবেন। এই হিসেবে পুরো বছরে একজন কর্মী বেতন পাবেন ৬২ হাজার ৪০০ ইউরো (বাংলাদেশি প্রায় ৬২ লাখ ৪৪ হাজার ৪০৬ টাকা)। চাকরির শর্তে বলা হয়েছে, এটি মূলত শারীরিক শ্রমের কাজ এবং সারা বছরই করতে হবে।
এই কাজের জন্য অনলাইনে দুটি বিজ্ঞাপন প্রকাশিত হয়েছে। একটি বিজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, কোম্পানি বাঁধাকপি তোলার জন্য ফিল্ড অপারেটর সন্ধান করছে। এই কাজটি পিসওয়ার্ক অর্থাৎ যেসব বাঁধাকপি এবং ব্রকলি ভেঙে গেছে তার সংখ্যা অনুযায়ী আপনি টাকা পাবেন। এই কাজে প্রতি ঘণ্টায় ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করার সম্ভাবনা রয়েছে। এই কাজ সারা বছর চলবে।
সবচেয়ে মজার বিষয়— চাকরিতে বেতন প্রতি ঘণ্টা হিসেবে দেওয়া হবে। অর্থাৎ দিনে বেশি টাকা আয় করার পথও খোলা থাকবে। তবে সবজির সংখ্যা অনুযায়ী টাকা কম-বেশি হতে পারে। কৃষি কাজে এত বিপুল বেতনের প্রস্তাব দেখে অনেকেই অবাক হয়েছেন।
করোনা মহামারির কারণে ব্রিটেনজুড়ে তীব্র শ্রমিক সংকট দেখা দিয়েছে। এই সংকট কাটিয়ে উঠতে দেশটির সরকার মৌসুমী কৃষি কর্মী প্রকল্পের অধীনে লোকজন নিয়োগের চিন্তা-ভাবনা করছে। শুধু কৃষি নয়, দেশটির অন্য অনেক খাতেও কর্মীর তীব্র ঘাটতির কারণে ভালো বেতন দেওয়া হচ্ছে। চালক থেকে শুরু করে পেট্রোল পাম্পে কর্মরতদেরও রয়েছে ব্যাপক ঘাটতি। এমন অবস্থায় তাদের বেতন ৭৫৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।