ত্বকভেদে স্ট্ক্রাব হবে ভিন্ন :আপনার ত্বক বুঝে বেছে নিন সঠিক স্ট্ক্রাব। শুস্ক, মাঝারি কিংবা তৈলাক্ত, সব ধরনের ত্বকের জন্য বাজারে পাওয়া যায় মানানসই স্ট্ক্রাব। স্ট্ক্রাব নির্বাচনের সময় আরেকটি জিনিস মাথায় রাখা খুবই জরুরি। তা হলো, স্ট্ক্রাব দানার আকৃতি সব সমান কিনা। দোকানে যেসব রাসায়নিক উপাদানে তৈরি স্ট্ক্রাব পাওয়া যায়, তার অধিকাংশের মধ্যেই মাইক্রো প্লাস্টিক থাকে। এ ক্ষেত্রে যদি বিডস বা দানার আকার সমান না হয়ে কোনোটা বেশি তীক্ষষ্ট অথবা ধারালো হয়, তবে তা আপনার স্পর্শকাতর ত্বকে মাইক্রো টিয়ারস তৈরি করতে পারে, যা ত্বকের প্রচুর ক্ষতি করে; বিশেষ করে ত্বকের ভেতরে থাকা কোষের। এতে ত্বকের ধরন বদলে যায় এবং খুব অল্প বয়সেই ত্বকে বিমর্ষ এবং বুড়ো ভাব চলে আসার আশঙ্কা থাকে। শুধু ত্বকের ভিন্নতা অনুযায়ী নয়; মৌসুমের ভিন্নতা অনুযায়ীও স্ট্ক্রাব ভিন্ন রকম হবে। কারণ গরমের দিনে ত্বকের যে চাহিদা, শীতকালে নিশ্চয় তা একই হবে না। তাই ময়েশ্চারাইজারের মতো স্ট্ক্রাবও ঋতু অনুসারে বাছাই করা উচিত। আর কোনটি বেছে নেবেন, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগলে আপনার পছন্দের ঘরোয়া স্ট্ক্রাবটির সঙ্গে গ্লিসারিন, গোলাপ জল, দুধ, ঘৃতকুমারী বা অ্যালোভেরার রস মিশিয়ে নিতে পারেন। এতে আপনার ত্বক ময়েশ্চারাইজড থাকবে।
প্রাকৃতিক উপাদানের বিকল্প নেই :সব সময় মনে রাখবেন, যত দামি প্রসাধন সামগ্রী এবং স্কিনকেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করা হোক, ত্বকের যত্নে প্রাকৃতিক উপাদানের কোনো বিকল্প হতে পারে না। স্ট্ক্রাবের ক্ষেত্রেও একই ব্যাপার খাটে। বাজারে পেঁপে, শসা ইত্যাদি ফলের স্ট্ক্রাব পাওয়া যায়। যদিও এতে রাসায়নিক উপাদানের উপস্থিতি আছে, তবু এগুলো কেনা ভালো।
এ ছাড়াও ঘরে বসে, আপনার রান্নাঘরে যা আছে তা দিয়েই পাঁচ মিনিটে তৈরি করে নিতে পারেন স্ট্ক্রাব। লেবু, ওটস, কফি, গাজর, শসা, গুঁড়া চাল, পাতি লেবুর রস, বেসন, চিনি, গোলাপজল, টমেটোর রস ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়। আরেকটি কাজ করা যায়; কমলালেবু খাওয়া হয়ে গেলে তার খোসা ফেলে না দিয়ে রোদে শুকিয়ে কৌটায় সংরক্ষণ করা যায়। পরে সুবিধামতো গুঁড়া করে স্ট্ক্রাব তৈরিতে ব্যবহার করুন। কমলালেবুর খোসা রূপচর্চার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান।
এ ছাড়াও গাজরের রস, শসার রস, চালের গুঁড়া মিশিয়ে চটজলদি একটি স্ট্ক্রাব বানিয়ে নিতে পারেন। মুখের ত্বক অনেক বেশি সেনসিটিভ হয়ে থাকে। তাই ঘরোয়া উপাদান ব্যবহারেও সতর্ক থাকা ভালো। মুখের ত্বকের জন্য ওটস, বেসন, কমলার গুঁড়ো করা খোসা, কফি ইত্যাদি ব্যবহার করতে পারেন। শরীরের অন্যান্য অংশ যেমন হাত-পায়ের ত্বক, ঘাড় ইত্যাদি স্থানে সি সল্ট, মেথি, ডাল বাটা ইত্যাদি ব্যবহার করুন। মেথি, লেবুর রস ও ডাল বেটে বানানো স্ট্ক্রাব বিশেষ করে পায়ের ত্বকের জন্য ভালো।
শরীরের সব অংশেই স্ট্ক্রাবিং জরুরি :শুধু মুখের ত্বককে গুরুত্ব দিলেই হবে না; শরীরের অন্যান্য অংশের ত্বকেও স্ট্ক্রাব করা সমানভাবে জরুরি। তা না হলে দেখা যাবে মৃত কোষ থেকেই যাবে, যা পরে আপনার ত্বককে শুস্ক, নির্জীব ও প্রাণহীন করবে। এতে হাত-পায়ের চামড়া কুঁচকে যাওয়া ও ত্বকে বিভিন্ন রকম দাগ ও বলিরেখা আসার আশঙ্কা থাকে। তাই ত্বক ভেজা অবস্থায় অর্থাৎ গোসলের সময় অথবা পরপরই স্ট্ক্রাব করার চেষ্টা করুন। কারণ তখন ত্বক ভেজা ও নরম থাকায় মরা কোষগুলো সহজেই সরিয়ে ফেলা যায়। পায়ের স্ট্ক্রাবিংয়ে পিউমিস স্টোন ব্যবহার করতে পারেন। এ ছাড়া ত্বক শুকনো অবস্থায় স্ট্ক্রাব করতে চাইলে কোনো মাইক্রোফাইবার কাপড় নিয়ে সারা শরীর ম্যাসাজ করুন। সার্কুলার মোশনে বা ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে ম্যাসাজ করলে বেশি ভালো ফল পাবেন।