গহনা পরতে কার না ভালো লাগে! যদিও কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম হতেই পারে; তবু গহনার প্রতি তনয়ার চিরাচরিত এই প্রেম শুরু হয় মূলত কৈশোর থেকেই। কারণ এ সময়েই মেয়েদের নিজের সাজসজ্জার প্রতি দেখা দেয় প্রবল আগ্রহ। মায়ের জমিয়ে রাখা কিশোরী বেলার সেই ঝুমকো, চুড়ি, পায়েল পাওয়া তো বিশাল ভাগ্যের ব্যাপার। সেই সঙ্গে মুগ্ধতা আর একরাশ আনন্দও বয়ে আনে। হাত খরচের টাকা জমিয়ে টুকিটাকি গহনা কিনে তা পরে আয়নায় নিজেকে দেখে মুগ্ধ হওয়া এবং বন্ধুদের প্রশংসা পাওয়া অধিকাংশ মেয়ের কৈশোরের এক অপরিহার্য অংশই বলা চলে।
কিশোরীর গহনাকে কেবল অনুষঙ্গ হিসেবেই ছকে বাঁধা ঠিক নয়। প্রথম শাড়ির মতো, প্রথম গহনাগুলোর সঙ্গেও জড়িয়ে থাকে আবেগ এবং স্মৃতি। খুব দামি কিছু যে হতে হবে তা কিন্তু একেবারেই নয়। বাজেট এবং শখের মাঝে সংমিশ্রণ ঘটলে তবেই না কেনা যায় গহনা। এসব গহনা আবার এমনও হতে হবে, যাতে শুধু শাড়ি কিংবা কামিজই নয় বরং ফতুয়া, টপসসহ যে কোনো হাল ফ্যাশনের পোশাকের সঙ্গেই যেন মানিয়ে যায় খুব সহজেই। খুব বেশি জবরজংও যাতে দেখতে না লাগে। চলুন জেনে নেওয়া যাক এসব গহনার আদ্যোপান্ত-
দুল : গহনার মধ্যে সবচেয়ে বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করে বোধ হয় কানের দুল। কিশোরী বা টিনএজার যারা আছে, তাদের জন্য প্রাচীনকাল থেকে চলে আসা পছন্দের বিভিন্ন আকার এবং রঙের আকর্ষণীয় ঝুমকোর নাম আসে সবার আগে। ঝুমকো শুধু দেশি পোশাকই নয়, পশ্চিমা পোশাকের সঙ্গেও আজকালকার ফ্যাশনে মানিয়ে যাচ্ছে অনায়াসেই। এ ছাড়া রয়েছে তামা, পুঁতি, সুতা, সিলভার অ্যালয় এবং কাঠের হ্যান্ডপেইন্টেড দুল ও কানপাশা। আছে নানা রঙের রংপালক ও ট্যাসেল বসিয়ে তৈরি করা দুল। যেগুলো শাড়ি থেকে শুরু করে দিব্যি চলে যাবে সব পোশাকের সঙ্গে।
নথ : নাকে পরার গহনা হিসেবে আজকাল নোজ পিন বা নথ বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। তামা, রুপা ইত্যাদি ধাতু ছাড়াও পাওয়া যায় কাঠের হাতে নকশা করা নথ। নাকে পিয়ার্সিং বা ফুটো করা ছাড়াই এসব নথ পরা যায়। এটিই গ্রহণযোগ্যতার মূল কারণ বলা যায়।
বালা, চুড়ি ও অঙ্গুরি : বালা-চুড়ি এগুলো প্রায় সব মেয়েই পরে থাকে। কিশোরীদের কাছে চুড়ির গ্রহণযোগ্যতা তো বেশ ভালো। বালা যদিও তেমন প্রাধান্য পায় না বললেই চলে। কাচ এবং তামার চুড়ি ছাড়াও এখন পাওয়া যায় নানা ধরনের সুতা, পাট, বাঁশ, কাপড়, মাটি, নানা রকম ধাতু, কাঠ এবং কাপড়ের ওপর এঁকে সুতা দিয়ে নকশা করা বাহারি চুড়ি ও বালা। বিভিন্ন রকম পাথর বসানো ব্রেসলেটও নজর কাড়ছে এখন।
অঙ্গুরি অর্থাৎ আংটির চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। যারা কম গহনা পরতে পছন্দ করেন তারা চুড়ি কিংবা ব্রেসলেটের ঝামেলায় না গিয়ে শুধু একটি আংটি পরেই সাজকে করে তুলতে পারেন পরিপূর্ণ। কিশোরীদের ক্ষেত্রেও বিষয়টি একই রকম প্রায়। এ ক্ষেত্রেও রয়েছে তামা, রুপা, কাঠ এবং কাপড়ের ওপর নকশা করা নানা আংটির বাহার।
নেকলেস :নেকলেস বা মালার ক্ষেত্রে হাল ফ্যাশনে আছে বিভিন্ন রকম পাথর বসানো চোকার। এ ছাড়া তামা, কাঠ, পুঁতি, সুতা, পাট ইত্যাদি উপকরণে তৈরি নেকলেসও গুরুত্ব পায় উৎসবের সাজ অনুসারে। কিশোরীর গহনায় প্রায় সব নকশাকারই খেলা করেন বেশ উজ্জ্বল রংগুলো নিয়ে।
নূপুর ও পায়েল : নূপুর সব কিশোরীরই পছন্দ। বাজারে পাওয়া যায় জার্মান সিলভার ও বিভিন্ন মেটালে তৈরি নূপুর। এসব কিশোরী থেকে তরুণী সব বয়সের সঙ্গেই মানানসই। এ ছাড়া কাঠের পুঁতি, বিভিন্ন রঙের বিডস দিয়ে তৈরি পায়েল ও নূপুর পাওয়া যায়। নূপুরের তুলনায় পায়েলের চাহিদাই আজকালকার কিশোরীদের কাছে বেশি। বেশ স্টাইলিশও লাগে দেখতে।