একটি ছোট্ট শব্দ, একটি ছোট্ট ডাক কিন্তু প্রশান্তি সীমাহীন। স্বস্তির এক সুমধুর শব্দ মা। যেখানে আবেগ, নির্ভরতা, ত্যাগ ও মমতা ভালোবাসার মধুরতায়। প্রত্যেকটা মানুষের জীবনে তার সেরা অর্জনটি হচ্ছে মা। এই ডাক শুধু মমতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, এর ক্ষমতাও অসীম।
আজ বিশ্ব মা দিবস। প্রতিবছর মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার মা দিবস পালন করা হয়।বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নানা আয়োজনের মাধ্যমে এই দিনকি পালিত হয়।সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমও এর বাইরে নয়। কারণ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেলেমেয়েরা নানাভাবে তাদের মায়ের প্রতি ভালোবাসা প্রকাশ করে।
মা হচ্ছেন একজন নারী, যিনি গর্ভধারণ, সন্তানের জন্ম তথা সন্তানকে বড় করে তোলেন। তিনিই সন্তানের প্রথম অভিভাবক ও আপনজন। সন্তানের পরম আশ্রয়। সন্তানের কাছে তার প্রতিটি দিনই মায়ের। তাইতো আবেগ ভালবাসা দুঃখ ও কষ্টে সবসময়েই সন্তানের মুখে অস্ফুট ‘মা’ শব্দটি সবার আগে বেরিয়ে আসে।
আমাদের জীবনে যার অবস্থান সবকিছু ঊর্ধ্বে তিনিই হচ্ছেন মা। তাই তাকে শ্রদ্ধা বা ভালোবাসার জন্য আদৌ কি কোন বিশেষ দিনের প্রয়োজন আছে? নাকি বছরের প্রত্যেকটা দিনেই উচিত মাকে ভালোবাসা?শুধুই কি সন্তান হিসেবে দায়িত্ব-কর্তব্যের জন্যই দিনটি পালন করা? না, কখনো নয়।কারণ মায়ের কোন সঙ্গ হয় না। মা শুধুই মা। তাকে ভালোবাসার জন্য বিশেষ কোন দিনের প্রয়োজন নেই। প্রতিটা দিনই তাকে ভালোবাসা যায়।
চোখের চাহনিতে সন্তানের মন বুঝে যাওয়া এই ব্যক্তিটাই মা। মায়ের ভালোবাসা সবকিছুর ঊর্ধ্বে। তাই বছরের প্রতিটা দিন মা কে ভালবাসুন। প্রতিটা দিনই হোক মা দিবস। এই করোনাকালীন সময়ে সব মা- ই যেন সুস্থ থাকেন, ভালো থাকেন এটাই প্রত্যাশা।
মা' সে তো একজন যাদুকর। সব দুঃখ-কষ্টকে কেমন যাদু করে দূর করে দেয়। তার কাছে সবসময় শান্তি মেলে। যিনি মন খারাপের অভিযোগগুলো নিমিষেই মুছে দিতে জানেন। যার মধ্যে নেই কোন স্বার্থপরতা। সে জানে কিভাবে ভুলোগুলোকে শুধরে ভালোবাসার রূপ দিতে হয়।
‘পথের ক্লান্তি ভুলে স্নেহভরা কোলে তব মা গো’ হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের এমন গানে কার হৃদয় না দুলে ওঠে। মাকে নিয়ে বিশ্বজুড়েই ছড়িয়ে আছে অনেক গান, কবিতা, গল্প ও কাহিনী।
অবশ্য তারও আগে ১৯০৭ সালের ১২ মে প্রথমবার ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার গ্রাফটন শহরে 'মাদার্স ডে' পালিত হয়েছিল। অ্যানা জার্ভিস নামের এক মার্কিন নারী তার মা অ্যান মারিয়া রিভস জার্ভিসের মৃত্যুদিনটি একটু অন্যভাবে পালন করার কথা ভেবেছিলেন। অ্যান সমাজকর্মী ছিলেন। তিনি নারীদের জন্য কাজ শুরু করেন। ছোট ছোট ওয়ার্ক ক্লাব বানিয়ে সমাজের পিছিয়ে পড়া নারীদের জন্য কাজ করতেন তিনি।
তারপর ১৯১৪ সালে মার্কিন কংগ্রেস ‘মা’ দিবসটি ৮ মে থেকে (মে’র দ্বিতীয় রোববার) পালন করা শুরু করে। আমেরিকার পাশাপাশি মা দিবস এখন বাংলাদেশসহ অস্ট্রেলিয়া, ব্রাজিল, কানাডা, চীন, রাশিয়া ও জার্মানসহ শতাধিক দেশে মর্যাদার সঙ্গে দিবসটি পালিত হচ্ছে।