সব

কিশোয়ার ও তার বাঙালিয়ানা চমক

আপডেট : ২৭ জুলাই ২০২১, ১৩:৪৯

মাস্টারশেফ অস্ট্রেলিয়া। ‘হোম কুক’দের নিয়ে সারাবিশ্বে রান্না নিয়ে যত প্রতিযোগিতা আছে, তার মধ্যে অন্যতম মর্যাদাপূর্ণ আসর। সেই আসরে অংশ নিয়ে প্রথম বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত হিসেবে গ্র্যান্ড ফিনালে পর্যন্ত পৌঁছেই সবাইকে চমকে দিয়েছিলেন কিশোয়ার চৌধুরী। সেই গ্র্যান্ড ফিনালে’র দুই এপিসোডের তিন রাউন্ডের কঠিন লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত আর মাস্টারশেফ ট্রফি জেতা হয়নি তার। তবে গোটা সিজনেই নিজের শেকড়ের অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশের রান্নাকে সফলভাবে তুলে ধরেছেন বিশ্বমঞ্চে। বিচারকসহ দর্শকদেরও মন জয় করে নিয়েছেন কিশোয়ার।

মাস্টারশেফের ১৩তম এই সিজনে শেষ পর্যন্ত চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন জাস্টিন। প্রথম রানার-আপ হয়েছেন পিট আর দ্বিতীয় রানার-আপ হয়ে সিজন শেষ করেছেন কিশোয়ার।

একটির পর একটি পর্বে তিনি বাংলাদেশি খাবার এবং বাংলাদেশি খাবারের অনুপ্রেরণায় মাস্টারশেফের বিচারকদের মুগ্ধ করেছেন। প্রতিটি খাবারের পেছনে তার যে আবেগ, খাবারের স্বাদের পাশাপাশি সেটিও ছুঁয়ে গেছে দর্শক ও বিচারকদের।

মাস্টারশেফ কিচেনে প্রথম দিনেই আমাদের দেশের জনপ্রিয় মাছ ভাজির অনুপ্রেরণায় সার্ডিন মাছের ভাজি করেছিলেন কিশোয়ার। সঙ্গে রেখেছিলেন কাঁচা আমের ব্রথ। সে রান্নার অনন্য স্বাদে বিমোহিত হয়েছিলেন তিন বিচারক। এর পরের এক পর্বে কুলফি ফিউশনের সঙ্গে হোয়াইট চকলেটের একটি ডেজার্ট রান্না করেন তিনি। তার ওপর মেহেদির ডিজাইনের আদলে করা নকশা ছিল দৃষ্টিনন্দন, ব্যতিক্রমধর্মীও। একটি পর্বে হারিয়ালি চিকেনও রান্না করেছিলেন।

নিউ মার্কেটে যে বিফ পেটিস পাওয়া যায়, তার অনুপ্রেরণায় মাস্টারশেফেও বিফ প্যাটিস বানিয়েছেন কিশোয়ার। তার সঙ্গে ছিল টমেটো-তেঁতুলের চাটনি। এছাড়া খাসির রেজালার সঙ্গে পরোটা, চিংড়ির মালাইকারির আদলে ক্রেফিশের মালাইকারি, ক্রয়সান্টের সঙ্গে রসগোল্লার ফিউশন, ভাপা মাছ, গরু ভুনার অনুপ্রেরণায় নর্থ আফ্রিকান অক্সটেইল কারি, টমেটো দিয়ে মাছ রান্নার আদলে টমেটো দিয়ে বারামুক্তি মাছের ঝোল (তার সঙ্গে জিরা রাইস আর বিন ভর্তা), এমনকি বিয়ে বাড়ির পোলাও আর চিকেন কোরমাও ছিল কিশোয়ারের ডিশের তালিকায়।

এখানেই শেষ নয়, একেবারে গ্রাম-বাংলার ঘরে ঘরে যে খাবার নিত্যদিনের, তাকেও পরিবেশন করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। খিচুড়ির সঙ্গে মাছ ভাজি, বেগুন ভর্তা ও নিরামিষ— তার স্বাদও অমৃত লেগেছিল বিচারকদের কাছে। নওয়াবি নানের সঙ্গে নেহারি করেছিলেন একটি পর্বে। এমনকি লাউ-চিংড়ি পর্যন্ত করেছেন কিশোয়ার। তার সঙ্গে ছিল জাউ ভাত আর সার্ডিন মাছের টক ঝোল। বাঙালি রান্নার এই স্বাদ রীতিমতো চমকে দিয়েছে সবাইকে।

কিশোয়ারের আরও কয়েকটি ডিশ ছিল চমকিত করার মতো। বিয়ের পর কিশোয়ার হানিমুনে এসেছিলেন রাঙ্গামাটিতে। সেখানে বাঁশে রান্না মাংস খেয়ে মুগ্ধ হয়েছিলেন। তা থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই একটি পর্বে রান্না করলেন ভাতের সঙ্গে বারামুন্ডি কারি। আবেগজড়ানো সে রান্না মন জিতে নিয়েছিল বিচারকদের। ঢাকার সম্ভবত জনপ্রিয় স্ট্রিট ফুড ফুচকাকে পর্যন্ত কিশোয়ার বানিয়েছেন নিজের মতো করে। আলু সেদ্ধ করে মাঝ খান থেকে স্কুপ করে তুলে নিয়ে বাইরের খোলসটাকে বানিয়েছেন ফুচকা। আর চটপটির ওপরে কুড়কুড়ে যে অংশটি দেওয়া হয়, তার জন্য ব্যবহার করেছেন আলুর ফ্রাই। সেমিফাইনালের ডেজার্টে আফটার ডিনার মিন্টে পান পাতায় পরিবেশিত মৌরির আইসক্রিম আর এর ওপর পান মসলা ছিল চমকৃত করার মতোই। বিচারক মেলিসা এই ডেজার্টকে বলেছিলেন, ‘লাভ লেটার টু বাংলাদেশ’।

গ্র্যান্ড ফিনালেতেও কিশোয়ার দেশি খাবারে বাজিমাত করার ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রেখেছেন। গ্র্যান্ড ফিনালের প্রথম এপিসোডের দ্বিতীয় রাউন্ডে কিশোয়ার কুকিং টেকনিক পেয়েছিলেন স্মোক, আর ইনগ্রেডিয়েন্ট পেয়েছিলেন হোয়াইট সয়া সস। স্মোক কুকিং টেকনিককে তিনি শেষ পর্যন্ত কাজে লাগান পান্তা ভাত তৈরিতে! আর হোয়াইট সয়া সসে মেরিনেট করে ভাজি করেন সার্ডিন মাছ। স্মোকড রাইস ওয়াটার তথা পান্তা ভাতের সঙ্গে পরিবেশন করেন মাছ ভাজি। আর তার সঙ্গে ছিল ‍শুকনো মরিচ পোড়া ও আলু ভর্তা আর পেঁয়াজ-মরিচ-ধনে পাতার সালাদ তথা সালসা। পান্তা আর আলু ভর্তা খেয়ে তিন বিচারকের মুগ্ধতার অন্ত নেই। তাই কিশোয়ারের পরিবেশন করা গ্রাম-বাংলার খাবার পান্তা আর আলু ভর্তার এই ডিশ তিন জনের কাছ থেকেই পেয়েছিল পারফেক্ট টেন!

ঝগড়ার পর ভুলেও যেসব কাজ করবেন না ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে

ঘরেই বানাতে পারেন ওয়াফেল

বিমান ওঠা-নামার সময় জানালা খোলা রাখার কারণ

ডায়াবেটিস রোগীর কাঁধে ব্যথা

শসা খাওয়ার উপকারিতা

ইলেক্ট্রনিক স্বাস্থ্য কার্ডের যুগে বাংলাদেশ

আরও BUZZ

আজকের খেলা

আজকের খেলা

কানাডা কোচের মেসিকে হুমকি

ঝগড়ার পর ভুলেও যেসব কাজ করবেন না ভালোবাসার মানুষের সঙ্গে

ডিএসএলআরের মতো স্মার্টফোনেই ছবি তুলতে সহায়ক ৫ অ্যাপ