গোলের পর জার্সি খুলে মাথার উপর ঘুরিয়ে পুর মাঠ দৌড়ানো অথবা জার্সি হাতে সমর্থকদের সাথে উজ্জাপন করা প্রতিতা ফুটবলারের কাছে আজর্ম স্বপ্ন । এল ক্লাসিকোতে মেসির শেষ মিনিটের গোল এর পর গ্যালারীর দিকে জার্সি উঁচিয়ে ধরে সেই বিখ্যাত উজ্জাপন একজন ফুটবল প্রেমি কখন ও ভুলতে পারবে না। আপনি মেসির ভক্ত হন অথবা না হন। হয়ত আপনি তার উজ্জাপন দেখে বিরক্ত হবেন অথবা আপনি সেই গোল টা বার বার দেখবেন মেসির সেই জার্সি উঁচিয়ে বুনো উল্লাশ করা উজ্জাপনের কারনে।
শুধু মেসির জন্য না। আপনি রোনালদো ভক্ত হন, অথবা নেইমার অথাবা জাভি। আপনি যদি ফুটবলের ভক্ত হন তাহলে সব ফুটবলারের উজ্জাপন আপনার মনে কোন না কোন ভাবে দাগ কাটবেই।
ফুটবলের সাথে মিশে থাকে আবেগ আর উত্তেজতা। গোল এর পর সেই আবেগ আর উত্তেজনা থেকে অনেক সময় ফুটবলাররা গায়ের জার্সি খুলে উজ্জাপন করেন। আর এই উজ্জাপনের মূল্য দিতে হয় হলুদ কার্ড দেখে।
২০০৪ সালের আগে পর্যন্ত উজ্জাপন নিয়ে বাধা ধরা কোন নিয়ম ছিল না। খেলোয়াড়রা নিজের ইচ্ছে মত উজ্জাপন করতে পারতেন। হোক সেটা জার্সি খুলে অথবা দর্শক দের সাথে উল্লাস করে। বলতে গেলে কোন আইকনিক গোলের পর এটি ছিল ট্রেডমার্ক উজ্জাপন ।
কিন্তু ২০০৪ সালের পর থেকে জার্সি খুলে উজ্জাপন করলেই পেতে হবে হলুদ কার্ড। কর্তিকক্ষ এটিকে নিয়ম বহির্ভূত বলে চিহ্নিত করেছে আরও অনেক কিছুর সাথে সাথে। তাই এখন আর আগের মত খুব বেশি দেখা যায় না এই উজ্জাপন। এই উজ্জাপন যে এখন আর দেখা যায় না এমন না। কিন্তু এখন কোন খেলোয়াড় যদি জার্সি খুলে উজ্জাপন করতে চান তাহলে তাকে মাথায় রাখতে হয় যে, তিনি আগে থেকে কোন হলুদ কার্ড দেখেছেন কিনা। কারন আগে থেকেই যদি কোন খেলোয়াড় হলুদ কার্ড দেখে থাকেন আর তারপর যদি জার্সি খুলে উজ্জাপন করেন তাহলে খেলোয়াড় দেখবেন সরাসরি লাল কার্ড। এ সব কিছুর কারনে খেলোয়াড় এবং দর্শক, কারোর ই এই নিয়ম টা পছন্দ না।
ফিফা তাদের রুলবুকের ১২ নং উপধারায় গোল এর পর কি করা যাবে আর কি করা যাবে না এটা নিয়ে বিস্তারত বলা আছে। আরও যা যা করা যাবে না তার মাঝে রয়েছে, বাজে অঙ্গ ভঙ্গি করা যাবে না, বাজে শব্দ ব্যবহার করা যাবে না, গোল এর পর দর্শক দের মাঝে গিয়ে উজ্জাপন করা যাবে না, উস্কানিমূলক কিছু করা যাবে না, মুখে মাস্ক অথবা অন্য কিছু দিয়ে ঢেকে রাখা যাবে না আর জার্সি তো খোলা যাবেই না। এই রকম আরও নিয়ম আছে।
এই সব নিয়ম ভঙ্গ করলে খেলোয়াড়রা হলুদ কার্ড অথবা আর্থিক জরিমানা অথবা কিছু ম্যাচের জন্য নিষিদ্ধ হতে পারেন। তাই বলে খেলোয়াড়রা ভয়ে ইচ্ছেমত উজ্জাপন বাদ দিবেন এমন না। এমন কিছু ঘটনাও ঘটেছে যে, একাধিক নিয়ম ভাঙ্গার জন্য খেলোয়াড় একের অধিক হলুদ কার্ড দেখে মাঠ ছেরেছেন। যদিও এমন ঘটনা খুবই কম।
তবুও জার্সি খুলে এমন উজ্জাপন করা থেকে খেলোয়ারদের বিরত রাখা সম্ভব হয় নি. জার্সি খোলা থেকে খেলোয়ারদেরবিরত রাখা অনেকটা অসম্ভব এ বলা যায়।
জার্সি কেন খোলা যাবে না এর পিছনে অনেক কারণ থাকলেও ৫ টা কারণ দেখানো হয়।
তার মধ্যে প্রধান কারণ হলো স্পন্সর. গোল এর পর স্পনসররা চাইবেই তাদের লোগো ও নাম ক্যামেরা তে ভালো ভাবে দেখা যাক। কিন্তু জার্সি খুললে তা সম্ভব না। এতে স্পন্সর দেওয়া বিপুল পরিমান টাকা বিফলে যেতে পারে এবং স্পন্সরদের টাকা দেওয়ার পরিমান কমে যেতে পারে।
আবার জার্সি খুলে উজ্জাপনকে মাত্রাতিরিক্ত বলেও ধরা হয়। যা বিপক্ষ দলের খেলোয়ারদের ভালো নাও লাগতে পারে। কথা কাটাকাটি সহ হাতাহাতি হবার সম্বোবনাথাকে. সব সময় যে এমন হয় তা না.
আবার জার্সি খুলে অনেক সময় খেলোয়াররা বিভিন্ন বার্তা দিয়ে থাকেন। যা কখন মজার আবার কখন ও উদ্দেশ্যমূলক।
যাই হোক না কেন , যত নিয়ম থাকুক না কেন, গাল এর পর খেলোয়ারদের জার্সি খোলা থেকে বিরত রাখা সম্ভব না। এটি তাদের কাছে আবেগ।