অথৈ জলের ভাসানে টলমল করছে হাকালুকি হাওরের বুক। ঢেউগুলো আছড়ে পড়ছে একে অপরের গায়ে। কেউ বলেন আফাল। এখানে ওখানে ভাসমান, দ্রুত ও ধীরে ছুটে যাওয়া ছোটবড় অনেক নাও।
দূরে দূরে সবুজ রেখার মতো গ্রামগুলো যেন ভেসে আছে জলের বুকে। জলের ওপর বুক ভেসে দাঁড়ানো হিজল-করসের বাগান। ওপাড়ে যখন সূর্যটা একটু একটু করে ডুবছে। হাওরের ঝিলিক দেওয়া রুপালি বুক আর আগের মতো নেই। বদলাতে শুরু করে। হাওরের জলে তখন লাল-হলুদের মাখামাখি।
শেষ বিকেলের রং মেখেছে মেঘদলও। রঙিন মেঘ নেমে আসে হাওরের জলে। টুকরো টুকরো হয়ে ভাসে, কখনও বা ডুবে।
মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওর হয়তো প্রতিবারই বর্ষায় এমন রূপের মায়া মেলে ধরে।
এবার করোনাকাল বলে কি হলো, হাকালুকি হাওরের সেই মুগ্ধতা, সেই মায়া যেন চেনা গন্ডি ছাড়িয়ে আরও হাজারও চোখকে ছুঁয়ে গেছে। দেশের অন্যতম হাওর হাকালুকি। যার বেশির ভাগই পড়েছে মৌলভীবাজারে।
বন বিভাগ, পর্যটক ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, এবার করোনা-সংক্রমণের কারণে মানুষ অনেকদিন ধরেই ঘরে আটকে আছে। মাধবকুন্ড জলপ্রপাত, লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানসহ জেলার বিভিন্ন পর্যটন কেন্দ্রগুলোও সরকারিভাবে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তাই করোনাকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে বের হওয়ার এই সুযোগে কাছের ও দূরের হাজারো পর্যটক ছুটে আসেন হাকালুকিতে।
কেউ হাকালুকি হাওরের পাড়ে পাড়ে ঘুরে সময় কাটিয়েছেন। কেউ বা নৌকা নিয়ে ভেসে গেছেন হাওরের বুকে। অনেককেই দেখা গেছে পর্যটন টাওয়ার থেকে পানিতে ঝাঁপ দিতে। কেউ সাঁতার কাটছেন। অনেকেই নৌকায় করে দল বেঁধে ঘুরেছেন। হই-হুল্লোড় করে জলে ভাসছেন।
বন বিভাগের পর্যটন টাওয়ার, বিট কর্মকর্তার কার্যালয়ের ছাদ এবং পাড়-সংলগ্ন বনবিভাগের পর্যটন ভবনে ছিল পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড়।