দেশের সবচেয়ে বড় ঝরনাটিই মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত নামে পরিচিত। ১৬২ ফুট উঁচু এই জলপ্রপাতটি দেখতে সবাই ভিড় জমায়। সিলেটের মৌলভীবাজার জেলায় অবস্থিত এটি।
১৯৯৯ সালের ১২ অক্টোবরের তথ্য অনুসারে, গঙ্গামারা ছড়া হয়ে বয়ে আসা জলধারাটি প্রায় ১৬২ ফুট উঁচুতে অবস্থিত। সেখান থেকেই জলধারা নিচে পড়ে মাধবছড়া হয়ে প্রবহমান।
মাধবছড়ার পানি পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়ে মিশেছে হাকালুকি হাওরে। সিলেট ভ্রমণে মাধবকুণ্ড ঝরনা ঘুরে আসতে ভুলেন না কেউ। পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় এক দর্শনীয় স্থান এটি।
টিকিট কেটে মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত ও ইকোপার্কের গেইট দিয়ে ভেতরে ঢুকতেই আপনার মন শান্ত হয়ে যাবে। পাহাড়ি সরু আঁকা-বাঁকা উঁচু রাস্তা ধরে এগিয়ে যেতে হবে। কিছুটা কাহিল হয়ে পড়লে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য আপনার সব ক্লান্তি দূর করবে।
ইকোপার্কের রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে শুনবেন পাখির ডাক। পাতার শব্দও কানে ভেসে আসবে। এই স্থানটি অনেক নিরিবিলি ও শান্ত। যতই এগিয়ে যাবেন ইকোপার্কের রাস্তা ধরে ততই এর প্রাকৃতিক পরিবেশ আপনাকে আলিঙ্গন করে নেবে।
কিছু দূর হেঁটে এগিয়ে গেলেই মাধবকুণ্ড জলপ্রপাতের শব্দ কানে আসবে। এগিয়ে যেতে যেতেই দেখা পাবেন দেশের সবচেয়ে বড় জলপ্রপাতটির। অনেকেই আছেন জলপ্রপাতের পানিতে নামতে ভয় পান। চাইলে তারা পাহাড়ি রাস্তায় দাঁড়িয়েও ঝরনার দৃশ্য উপভোগ করতে পারবেন।
শীতকালেই বেশি পর্যটকরা মাধবকুণ্ড ভ্রমণে যান। তবে তখন জলপ্রপাতে পানি কম থাকে। বর্ষার সময় জলপ্রপাতের পানি বেড়ে যায়। এ সময় দুধসাদা ঝরনার সৌন্দর্য ও শব্দ আপনাকে মুগ্ধ করবে মুহূর্তেই।
বিশাল এই জলপ্রপাতটির চারপাশের বনাঞ্চল আপনাকে স্বর্গীয় অনুভূতি দেবে। অবশ্যই সন্ধ্যার আগেই ঝরনা দেখে ফিরতে হবে। কারণ গেইট থেকে বেশ কিছুটা দূরে জলপ্রপাত। তাই চেষ্টা করবেন অন্ধকার হওয়ার আগেই সেখান থেকে ফিরে আসতে।
মাধবকুণ্ডের ডানপাশে পাথরের গায়ে আছে একটি গুহা। যার স্থানীয় নাম কাব। এই কাব দেখতে অনেকটা চালাঘরের মতো। মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশীর তিথিতে এই কাবের নিচে দাঁড়িয়ে গোসলের পর ভেজা কাপড় পরিবর্তন করেন অনেকেই।
কীভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে মাধবকুণ্ড গেলে সরাসরি কাঠালতলী বাজারে নামবেন। সেখান থেকে রিসার্ভ বা সিএনজিতে করে মাধবকুণ্ড পৌঁছাতে পারবেন।
ট্রেনে যেতে চাইলে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া স্টেশনে নামবেন। সেখান থেকে কাঠালতলী বাজার হয়ে মাধবকুণ্ড যেতে হবে।
কোথায় থাকবেন ও খাবেন?
মাধবকুণ্ডে থাকার জন্য জেলা পরিষদের ২ টি ডাকবাংলো ও ২টি আবাসিক হোটেল আছে। তবে সবচেয়ে ভালো হয় সিলেট ফিরে আসলে।
মাধবকুণ্ডে খাবারের দাম বেশি। প্রয়োজনে সঙ্গে খাবার কিনে নিয়ে যেতে পারেন। মৌলভীবাজার বা শ্রীমঙ্গল শহরে অনেক ভালো মানের খাবারের হোটেল পাবেন