গুগল জিমেইল সেবা চালু করেছিলো ২০০৪ সালের ১ এপ্রিল। প্রায় দুই দশক পরে এসে ইন্টারেনেট জগতে উপস্থিতি আছে কিন্তু জিমেইল ব্যবহার করেন না এমন ব্যবহারকারী খুঁজে পাওয়া বেশ কঠিন। ১৭ বছরে নিজস্ব মেইলিং সেবায় বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন নতুন ফিচার যোগ করেছে গুগল। তবে এর একটা বড় অংশই হয়তো এড়িয়ে গেছে ব্যবহারকারীর চোখ।
২০১৯ সালের অক্টোবর মাসের হিসেব অনুযায়ী, বিশ্বব্যাপী জিমেইল ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৫০ কোটির বেশি। দৈনন্দিন জীবন সহজ করতে পারে, কিন্তু ব্যবহারকারীর নজর এড়িয়ে গেছে, জিমেইলের এমন ফিচারগুলোর নিয়ে তালিকা প্রকাশ করেছে প্রযুক্তিবিষয়ক সাইট গিজমোডো।
১. সাইড প্যানেল ব্যবহার করুন:
ওয়েব জিমেইল ব্যবহারের ক্ষেত্রে নতুন সাইড প্যানেল ফিচার ব্যবহার করুন। গুগল ক্যালেন্ডার, গুগল কিপ এবং গুগল টাস্কস আইকন যদি নজরে না পড়ে, তবে স্ক্রিনের ডান পাশের নিচের অংশে থাকা তীর চিহ্নের আইকনে ক্লিক করুন। জিমেইল থেকে একসঙ্গে গুগলের একাধিক অ্যাপ ব্যবহারের জন্য এই ফিচারটিকে আদর্শ বলা চলে। বিশেষ করে ব্যবহারকারীর চওড়া স্ক্রিনের মনিটরে কাজ সুযোগ থাকলে বেশ আরামদায়ক হয়ে দাঁড়ায় ব্যাপারটি।
২. তারিখ ধরে সার্চ করুন:
জিমেইলের সবচেয়ে পুরনো এবং কার্যকর ফিচারগুলোর একটি এটি। তবে ব্যবহারকারীদের একটা বড় অংশের জানা নেই এই ফিচারটির ব্যাপারে। যেমন, ‘before:2021/1/1’ লিখে সার্চ করলে ওই তারিখের আগের সব ইমেইল খুঁজে পাওয়া যাবে। অথবা ‘after:2021/1/1’ লিখে সার্চ করলে পাওয়া যাবে ওই তারিখের পরের ইমেইলগুলো। নির্দিষ্ট দিন তারিখ ধরেও খুঁজে বের করা যাবে ইমেইল।
প্রযুক্তি জীবন সহজ করবে জিমেইলের যে ফিচারগুলো: পর্ব ১
৩. গুগল ট্রান্সলেট ব্যবহার করুন:
জিমেইলে বিল্ট-ইন ফিচার হিসেবেই আছে গুগল ট্রান্সলেট। ওয়েবে মেইল ওপেন করার পর ‘ট্রান্সলেট বার’ নজরে না এলে মেনু বাটনে চেপে ড্রপ ডাউন বার থেকে ‘ট্রান্সলেট মেসেজ’ ফিচারটি খুঁজে নিতে হবে। সেখান থেকে মূল ভাষা আর অনুবাদের ভাষা আলাদা ভাবে ঠিক করে দিতে হবে।
৪. ইনবক্স থেকে অটো-অ্যাডভান্স করুন:
কোনো মেইল আর্কাইভ বা ডিলিট করার পর তালিকায় থাকা পরের মেসেজটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে দেখায় ‘অটো-অ্যাডভান্স’ ফিচারটি। ওয়েবের ক্ষেত্রে জিমেইল সেটিংস-এর অ্যাডভান্সড ট্যাব থেকে অটো-অ্যাডভান্স চালু করে নিতে হবে। জিমেইল অ্যাপের ক্ষেত্রে ফিচারটি চালু করতে হবে জেনারেল সেটিংস-এর অটো-অ্যাডভান্স এন্ট্রি থেকে। তবে আইওএস-এর ক্ষেত্রে এখনও চালু হয়নি এই ফিচারটি।
৫. সাব-লেবেল দিয়ে ইমেইল গুছিয়ে রাখুন:
ব্যবহারকারী নিজে থেকেই নির্দিষ্ট সাব-লেবেল তৈরি করে মেইল গুছিয়ে রাখতে পারবেন। এই সাব-লেবেলগুলো কেবল ওয়েব থেকেই তৈরি করা যাবে, কিন্তু অ্যাক্সেস করা যাবে যে কোনো প্ল্যাটফর্ম থেকে। এর জন্য জিমেইল ইনবক্সের বাম পাশে থাকা নেভিগেশন প্যানের পাশে থাকা তিনটি ডটে ক্লিক করতে হবে, তারপর ‘অ্যাড সাব-লেবেল’-এ ক্লিক করতে হবে।
৬. ইমেইল সিঙ্ক করুন:
ডিফল্ট হিসেবে জিমেইল অ্যাপ ৩০ দিনের ইমেইল ফোনের সঙ্গে সিঙ্ক করে নেয়। তবে ফোনের মেমোরি বাঁচাতে চাইলে, অথবা মোবাইল ডিভাইস থেকে আরও বেশি মেইল দেখতে চাইলে ওই ফিচারটি পাল্টে নিতে পারেন ব্যবহারকারী। আইওএস-এর ক্ষেত্রে ‘সিঙ্ক সেটিংস’ থেকে সর্বোচ্চ ৬০ দিনের ইমেইল সিঙ্ক করা যাবে। আর অ্যান্ড্রয়েডের ক্ষেত্রে ‘ডেজ অফ ইমেইল টু সিঙ্ক’ অপশনটি থেকে এক থেকে ৯৯৯ দিন পর্যন্ত ইমেইল সিঙ্ক করা যাবে।
৭. বুকমার্ক ব্যবহার করুন:
ওয়েব থেকে জিমেইল বেশি ব্যবহার করলে, সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ইউআরএলগুলো বুকমার্ক করে রাখলে ইনবক্স ব্যবহারের গতি বাড়ানো যায় অনেকটা। এতে সরাসরি ড্রাফট, সেন্ট মেইল বা ইনবক্সের সব মেসেজের সঙ্গে লিংক করে রাখা সম্ভব। ইনবক্সে কোনো কিছুর জন্য সার্চ করার সময় অথবা নির্দিষ্ট লেবেল হাইলাইট করার সময় সহজ অ্যাক্সেসের জন্য ওই ইউআরএলগুলো ব্রাউজারে বুকমার্ক করে রাখা যেতে পারে।
৮. থিম ব্যবহার করে জিমেইলে চেহারা পাল্টে দিন:
ব্রাউজার থেকে থিম ব্যবহার করে জিমেইলের পুরো চেহারা পাল্টে দেওয়ার সুযোগও আছে ইমেইল সেবাটিতে। এর জন্য প্রথমে ইনবক্সের উপরে ডান পাশে থাকা সেটিংস কগ থেকে ‘থিমস’-এ যেতে হবে। তারপর থিমস এর পাশে থাকা ‘ভিউ অল ‘ অপশন চাপলে বিভিন্ন থিম থেকে নিজের পছন্দেরটি বেছে নিতে পারবেন ব্যবহারকারী। সাজেশনের থিমগুলো পছন্দ না হলে, ‘মাই ফটোস’ থেকে নিজের পছন্দের ছবি বেছে নিয়ে সেটি দিয়েও পাল্টে দেওয়া যাবে জিমেইলের চেহারা।