এখন জ্বর আসলে আর আগের মতো স্থির থাকা যায় না। জ্বর বা শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া কেবলমাত্র একটি উপসর্গ। এর কারণ কোভিড-১৯, ডেঙ্গু, চিকুনগুনিয়া না-কি টাইফয়েড?
ডেঙ্গু ও করোনা
দুটো রোগের উপসর্গ এক হলেও চিকিৎসা পদ্ধতিতে আছে বিস্তর পার্থক্য। কারো যদি দুটি রোগ একইসঙ্গে হয়; সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্য জটিলতা বাড়তে পারে। পাশাপাশি চিকিৎসা পদ্ধতির জটিলতা ও অনেক। অনেকেই প্রশ্ন করতে পারেন কেন?
কোভিড এ রক্ত জমাট বাঁধার প্রবণতা বেড়ে যায়। এজন্য রক্ত পাতলা করার ওষুধ ব্যবহার করা হয়। অন্যদিকে ডেঙ্গুতে রক্তপাত হওয়ার সম্ভাবনা বা ব্লিডিং টেনডেনসি থাকে। তাই রক্ত পাতলা করার ওষুধ দিলে আরো মারাত্মক পরিস্থিতি হবার আশঙ্কা থাকে।
এরই মধ্যে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে সারাদেশে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি প্রায় হাজার খানেক রোগী। যার অনেকেই আবার ভুগছেন কোভিডেও। দুটি রোগের লক্ষ্মণ যেহেতু কাছাকাছি, তাই জ্বর আসলে এখন আর কোন অবহেলা করা যাবেই না। জ্বর আসলে অবশ্যই পরীক্ষা করাতে হবে।
কোভিড এ সাধারণত জ্বরের সঙ্গে গলাব্যথা, নাকে ঘ্রাণ না পাওয়া, মুখে স্বাদ না পাওয়া, শ্বাসকষ্ট- এই উপসর্গগুলো থাকে। অপরদিকে ডেঙ্গুতে জ্বর, আর তার সাথে তীব্র গা ব্যথা, মাথাব্যথা, শরীরে র্যাশ আসতে পারে।
দুটো রোগের প্রাথমিক চিকিৎসা ঘরে বসে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে নেওয়া যায়। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য কোনো ব্যথার ওষুধ (এসপিরিন বা আইবুপ্রফেন) খাওয়া যাবে না। প্রচুর তরল খাদ্য গ্রহণ করতে হবে। কোভিড ও ডেঙ্গু শনাক্তকরণ এর জন্য টেস্ট করাতে হবে।
যারা গর্ভবতী, শিশু, বৃদ্ধ, স্থূল স্বাস্থ্যের অধিকারী, দীর্ঘদিন যাবত ডায়াবেটিস, হাইপারটেনশন, কিডনি, হার্ট, লিভার বা অন্য কোন দীর্ঘমেয়াদি শারীরিক সমস্যায় ভুগছেন, তারা খুব সতর্ক থাকবেন ও নিজ চিকিৎসক এর পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করবেন।
কখন হাসপাতালে যাবেন?
ওয়ার্নিং সাইন যেমন- পেট ব্যথা, বমি, অতিরিক্ত দুর্বলতা, শ্বাসকষ্ট বা কনসাস লেভেল অলটারড হলে দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করতে হবে। যারা উভয় সমস্যায় ভুগছেন; তারা কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে যাবেন।
আর যারা শুধু ডেঙ্গুতে ভুগছেন; তারা অন্য হাসপাতালে সেবা নিন। কখন কি করতে হবে? বা কোথায় যেতে হবে? এই সঠিক ধারণার অভাবে অনেক রোগী বিভিন্ন জায়গায় ঘুরতে থাকেন। চিকিৎসা নিতে দেরি হয়। ফলশ্রুতিতে রোগীর অবস্থা সংকটাপন্ন হয়ে ওঠে। তাই করণীয়গুলো জানতে হবে সবার৷
টেস্ট করানোর ক্ষেত্রে কোন অনীহা রোগীর জন্য সুফল বয়ে আনবে না। দুটো রোগের কারণ ছোট ছোট দু’টি ভাইরাস। তবে এদের কাছেই আজ আমরা অসহায়। তাই সবাই মিলে প্রতিরোধ গড়ি তুলি৷