একটি অনলাইন মাল্টিপ্লেয়ার ব্যাটল রয়্যাল-পাবজি বা 'প্লেয়ার আননোন ব্যাটেল গ্রাউন্ড'।এটি দক্ষিণ কোরিয়ার ভিডিও গেম কোম্পানি ব্লুহোলের একটি অঙ্গপ্রতিষ্ঠান। ২০০০ সালে জাপানে মুক্তি পাওয়া 'ব্যাটল রয়্যাল' ছবির কাহিনী এটি। এই কাহিনী থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই তৈরি হয়েছে হালের এই জনপ্রিয় ভিডিও গেম।
তবে হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে জনপ্রিয় এই ভিডিও গেম। পাবজির মূল ও লাইট ভার্সন ভারতে নিষিদ্ধ হয়েছিল আগেই। আর এবার আগামী ২৯ এপ্রিল বিশ্বজুড়ে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে পাবজি লাইট ভার্সনটিও। সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি নোটিশ দেওয়া হয়েছে পাবজির অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে। সেখানে বলা হয়, 'কোভিড-১৯ মহামারির এই কঠিন সময়ে আমরা অগণিত পাবজি লাইট প্রেমীদের কাছ থেকে যে আবেগ ও সমর্থন পেয়েছি, তার জন্য কৃতজ্ঞ। তবে অনেক বিবেচনার পর এটি বন্ধ করে দেওয়ার কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে এবং আমাদের সফর শেষ হওয়ার সময় চলে এসেছে। আমরা দুঃখের সঙ্গে জানাচ্ছি পাবজি লাইটের সেবা এপ্রিলের ২৯ তারিখ শেষ হয়ে যাবে।'
মুনাফা অর্জনের দিক থেকে ২০২০ সালের সমীক্ষায় বিশ্বে এক নম্বরে থেকেছে পাবজি। পরিসংখ্যান অনুযায়ী শুধু ২০২০ সালেই প্রায় ২.৬ বিলিয়ন রেভিনিউ অর্জন করেছে পাবজি। আয়ের জায়গায় বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে ২০২০ সালে ভারত, চীনসহ ছয়টি দেশে পাবজির উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। তিনটি কারণে মূলত এই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। প্রথমত, পাবজি শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়সের মানুষকে আসক্ত করে তুলছে। দ্বিতীয়ত- গেমে থাকা যুদ্ধের পরিবেশ প্রভাব ফেলছে মানুষের মনস্তত্বে। শেষ কারণটি হচ্ছে অ্যাপল, ফেসবুক যেমন ইউজারদের সবসময় স্ক্রিন টাইম সম্পর্কে সতর্ক করে, পাবজিতে সেই ব্যবস্থা নেই।
এমন দুর্ধর্ষ ফিচার, যুদ্ধের পটভূমি পাবজির আগে গেম জগতে প্রত্যক্ষ করেননি কেউই। আর তাই তো সারা বিশ্বে মুহূর্তে জনপ্রিয় হয়ে পড়ে পাবজি। যদিও খবরের শিরোনামে শুধুমাত্র পাবজির প্রতি নেশার জন্য বহুজনের প্রাণ হারানোর খবরও উঠে এসেছে বারবার।
সে সময় দক্ষিণ কোরিয়ার গেমিং কোম্পানি 'ব্লু হোল' চাচ্ছিল তাদের গেমগুলো আরও আধুনিকীকরণের মাধ্যমে বিশ্ব দরবারে পৌঁছাতে। গ্রিনের ডেজেড গেমটি খেলে গেমটির ডেভেলপার অর্থাৎ গ্রিনের প্রতি আগ্রহী হয়ে ওঠেন ব্লু হোলের ডিরেক্টর চাং হান কিম। ২০১৭ সালের মার্চে বাজারে আসে 'প্লেয়ার আননোন ব্যাটেল গ্রাউন্ড' বা পাবজি-র বেটা ভার্সন। গ্রিন, তার সহকর্মী এবং সর্বোপরি ব্লু হোলের জন্য এটি ছিল প্যাশন প্রজেক্ট।
২০১৭ সালের ডিসেম্বরে পিসির জন্য গেমটির ফুল ভার্সন রিলিজ হয়। পরের বছর অন্যান্য মাধ্যমের জন্যও পাবজি রিলিজ করা হয়। ২০১৭ সালের শুরুতে যখন বেটা ভার্সন বেরিয়েছিল তখন মাসখানেকের ব্যবধানে প্রায় মিলিয়ন সংখ্যক ডাউনলোড হয় গেমটি। তিন মাসের ব্যবধানে যা হয় পাঁচ মিলিয়নে। ডিসেম্বরে ফুল ভার্সন বের হওয়ার পর ডাউনলোড সংখ্যা পৌঁছে যায় ৩০ মিলিয়নে। ২০২০ সালে এসে এই সংখ্যা ৭৩৪ মিলিয়নে দাঁড়িয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ২৪ শতাংশ ডাউনলোড হয়েছে ভারতে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে আছে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র।