টেন্ট ব্রিজে সিরিজের প্রথম ম্যাচে ঘটল উল্টো ঘটনা। উপযুক্ত কন্ডিশনের পূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করলেন ভারতীয় পেসাররা। তাতেই কিনা ইংলিশরা গুটিয়ে গেল ২০০’র ও কম রানে।
হোক চিরচেনা নিজেদের মাঠে, তাও কন্ডিশন আর উইকেটের ধরন দুটোই ছিল ব্যাটিং-বিরুদ্ধ। এরপরও ইংল্যান্ড অধিনায়ক জো রুট টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের দ্বিতীয় চক্রের শুরুর ম্যাচে টসে জিতে নিলেন ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত।
অধিনায়ক রুটের সে সিদ্ধান্ত যে সঠিক নয়, তা বুঝিয়ে দিতে ভারত সময় নিল মোটে ৫ বল। বাঁহাতি রোরি বার্নসকে রানের খাতা খোলার আগেই এলবিডব্লিউর শিকার বানিয়ে সাজঘরে ফেরত পাঠান যশপ্রিত বুমরাহ।
এরপর বুমরাহ আর শামি দারুণ বোলিং বেশ অস্বস্তিতেই রেখেছিল ডম সিবলি আর জ্যাক ক্রলিকে। তবু পরের ২০ ওভারে কোনো বিপদও অবশ্য হতে দেননি দুই ইংলিশ টপ অর্ডার ব্যাটসম্যান।
পরিস্থিতি বদলাল মোহাম্মদ সিরাজের আঘাতে। তার হঠাৎ লাফিয়ে ওঠা বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ক্রলি, ভাঙে ইংলিশদের ৪২ রানের জুটি।
বিরতি পর্যন্ত আর কোনো ক্ষতি অবশ্য হয়নি স্বাগতিকদের। তবে বিরতির পরই বুমরাহ, সিরাজের সঙ্গে উইকেট উৎসবে যোগ দেন শামি। ডম সিবলিকে ফিরিয়ে আদায় করেন প্রাপ্য উইকেটটা।
জো রুট অবশ্য সতীর্থের বিদায়ে বিচলিত হননি, তুলে নিয়েছিলেন অর্ধশতক। তবে জনি বেয়ারস্টো দারুণভাবে থিতু হয়ে সঙ্গ দিচ্ছিলেন অধিনায়ককে। চা বিরতির ঠিক আগে তিনিও ফেরেন শামির বলে এলবিডব্লিউ হয়ে। তাতে ভেঙে যায় তাদের ৭২ রানের জুটি, মিডল-লোয়ার অর্ডারের ব্যর্থতায় যা ইনিংস শেষে বনে যায় দলটির সর্বোচ্চ জুটিও।
বেয়ারস্টোর বিদায়ের পরপরই ডাকা হয় চা বিরতি। সেখান থেকে ফিরে সে ওভারেই শামি তুলে নিয়েছেন ড্যান লরেন্সকেও। ১৩৮ রান তুলতেই তখন ইংলিশদের অর্ধেক ইনিংস হাওয়া।
তবু কিছুটা আশা ছিল ইংল্যান্ডের। অধিনায়ক রুট তো ছিলেনই, সঙ্গে ছিলেন জস বাটলার আর ওলি রবিনসনও। কিন্তু ইংলিশদের সে আশা শেষ হয়ে যায় মাত্র তিন ওভারের ব্যবধানে। বাটলার ফেরেন বুমরাহর শিকার হয়ে। এরপর শার্দুল ঠাকুরের এক ওভারে রুট আর রবিনসনও ফিরে এলে মাঝারি সংগ্রহের সম্ভাবনাও মিলিয়ে যায় স্বাগতিকদের।
শার্দুলের শিকার হওয়ার আগে রুট করেছিলেন ৬৪, তাতে ইংলিশদের ইনিংসকে কিছুটা ভদ্রস্থ রূপ তো দিয়েছেনই, সঙ্গে একটা ইংলিশ রেকর্ডও করে নিয়েছেন নিজের নামে। ইংল্যান্ডের হয়ে সবচেয়ে বেশি আন্তর্জাতিক রান করা ব্যাটসম্যান বনে যান তিনি। সব ফরম্যাটে বর্তমানে তার রান ১৫৭৮০, তাতে পেছনে ফেলে দেন অ্যালিস্টার কুককে, যার রানসংখ্যা ১৫৭৩৭।
রুটের বিদায়ের পর লড়েছেন কেবল স্যাম কারান, তবে তার অপরাজিত ২৭ রানের ইনিংস সঙ্গীর অভাবে পায়নি আরও বড় রূপ। তাতে ইংলিশ ইনিংস থামে মাত্র ১৮৩ রানেই। নিজেদের মাটিতে ভারতের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের সর্বনিম্ন প্রথম ইনিংস সংগ্রহ এখন এটিই। এর আগে ২০০৭ সালে ভারতের মুখোমুখি হয়ে ১৯৬ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল দলটি।
জবাবে ভারত দিনের বাকি অংশ কাটিয়েছে নির্বিঘ্নেই। রোহিত শর্মা আর লোকেশ রাহুল দিনের শেষ ১৩ ওভার কাটিয়ে দিয়ে করেছেন ৯টি করে রান।