১৯৯৬ সালে মিশন ইম্পসিবল' ছবি দিয়ে প্রথম দর্শকদের সামনে হাজির হন 'ইথান হান্ট'। পরেরটা তো ইতিহাস। পঁচিশ বছর কেটে যাওয়ার পরেও 'ইম্পসিবল' সিরিজ এবং 'ইথান হান্ট'কে নিয়ে দর্শকদের আগ্রহ কিংবা উত্তেজনায় এতটুকুও ভাটা পড়েনি। এখনও 'মিশন ইম্পসিবল' সিরিজের পরবর্তী ছবির জন্য রীতিমতো হা পিত্যেশ করে বসে থাকেন সিনেমাপ্রেমীরা।
বিশ্ব সিনেমার ইতিহাসে অন্যতম সুপারহিট ছবির ফ্র্যাঞ্চাইজি হিসেবে উঠে আসবে এই সিরিজ এবং 'ইথান হান্ট' চরিত্রে অভিনয় করা টম ক্রুজও এই ছবির জেরে ছুঁয়ে ফেলেন নতুন মাইলফলক। দীর্ঘ ৩৫ বছরের ক্যারিয়ারে একের পর এক সুপারহিট ছবি উপহার দিলেও সম্ভবত এই তারকা-অভিনেতার সবথেকে আলোচিত চরিত্রের নাম 'ইথান হান্ট'।
এবার এই সিরিজের প্রথম ছবির মুক্তির রজত জয়ন্তী হিসেবে বেশ কিছু অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণ করেন টম। তার মধ্যে একটি 'মিশন ইম্পসিবল ১ 'এ আমেরিকার গুপ্তচর সংস্থা 'সিআইএ' সদর দফতরে ভল্ট সিকোয়েন্স, যেখানে শুধু একটি তারের সাহায্যে বেশ উঁচু থেকে ঝাঁপিয়ে পড়ে মাটি থেকে বেশ খানিকটা ওপরে বিপজ্জনকভাবে ঝুলে ছিলেন তিনি। শরীর থেকে এক ফোঁটা ঘাম পড়লেও দেয়ালের ফাঁকে তৈরি থাকা লেজার রশ্মি বেরিয়ে এসে ছিন্নভিন্ন করে দেবে ইথান হান্টের শরীর।
পাশাপাশি ধরা পড়ে যাবে তাকে এ কাজে সাহায্যকারী বাকিরা। এক কথায় সেই সিকোয়েন্সে তৈরি হওয়া সাসপেন্স পৌঁছেছিল উত্তেজনার তুঙ্গে।
টমের কথায়, 'এখনও পর্যন্ত আমার কেরিয়ারে করা অন্যতম কঠিন স্টান্ট ছিল ওই ভোল্ট সিকোয়েন্সের ব্যাপারটা। আমার বেশ মনে আছে বারবার গন্ডগোল হয়ে যাচ্ছিল ওই শট নিতে। ওপর থেকে পড়ার সময় ঠিকমতো ভারসাম্য না রাখার দরুণ সরাসরি মুখ থুবড়ে পড়ছিলাম মাটিতে। কোনও রকমে মুখ বাঁচলেও নাকে আঘাত লেগেছিল। এদিকে নির্ধারিত সময়ের পর সেখানে আর শুটিং করা যাবে না, তাই চিন্তাও বাড়ছিল। শেষপর্যন্ত একবার ঠিকঠাক ঝুলে থাকতে পারলাম যেখান থেকে শটটা উতরে যাবে বলে মনে হলো প্রথমবার। আনন্দের চোটে তখন মনে মনে নিজেকে বলেছি, যখন মাটিতে এবার পড়িনি তাহলে পেরে যাবো। ওদিক থেকে পরিচালক চিৎকার করে নির্দেশ দিয়ে যাচ্ছেন একনাগাড়ে। কোনওরকমে শটের শুটিং শেষ করলাম।'
তবে এখানেই শেষ নয়। টম আরও জানান এরপরেও নিশ্চিন্ত হতে পারেনি পরিচালক ব্রায়ান ডে পালমা। তার নির্দেশে বেশ আরও কয়েকবার ওই দৃশ্যের শুটিং করে গিয়েছিলাম প্রত্যেকবারই ভাবছিলাম এবারে আরও ভালো করে করতে হবে। এমনকি আমার জুতোর মধ্যে বেশ কিছু খুচরো পয়সাও ঢুকিয়ে নিয়েছিলাম যাতে ঝোলার সময় শরীরের ভারসাম্য বজায় থাকে। শরীর সামনে বেশি ঝুঁকে না যায়। শেষপর্যন্ত যখন বেদম হাঁফিয়ে উঠেছি, এমন সময় দূর থেকে শুনি খিকখিক করে হাসছে পরিচালক। বুঝলাম তার দুষ্টুমি এটা। আসলে অনেক আগেই শটটা 'ওকে' হয়ে গিয়েছিলো স্রেফ মজা পাবে বলে আমাকে আরও বেশি করে খাটাচ্ছিলেন নির্মাতা।
প্রসঙ্গত বর্তমানে 'মিশন ইম্পসিবল ৭' ও ' মিশন ইম্পসিবল ৮' এর ছবির কাজে ব্যস্ত ইথান হান্ট মানে টম ক্রুজ।